প্রেম, রাজনীতি, দ্রোহ নিয়ে নিরন্তর লিখে চলেছেন কবি নির্মলেন্দু গুণ। আজ তার ৮০তম জন্মদিন।
১৯৪৫ সালের ২১ জুন নেত্রকোনার বারহাট্টার কাশবন গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। সুখেন্দু প্রকাশ গুণ ও বীণাপাণি দম্পতির তিন মেয়ে এবং দুই ছেলের মধ্যে নির্মলেন্দু গুণ সবার ছোট। মাত্র চার বছর বয়সে মাকে হারান তিনি।
স্কুলে থাকতেই সাহিত্যে নিজের প্রতিভার পরিচয় দেন। নেত্রকোনা থেকে প্রকাশিত ‘উত্তর আকাশ’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয় নির্মলেন্দু গুণের প্রথম কবিতা ‘নতুন কান্ডারী’।
১৯৬৯-৭০ সালের উত্তাল গণ-আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে তিনি লেখেন তার বিখ্যাত কবিতা ‘প্রেমাংশুর রক্ত চাই’। সে সময়ে লেখা ‘হুলিয়া’ কবিতায় তুলে ধরেছেন সমকালীন সামাজিক, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট। ‘স্বাধীনতা, এই শব্দটি কী করে আমাদের হলো’ তার একটি জনপ্রিয় কবিতা। বিভিন্ন সময়ের নানা আন্দোলন-সংগ্রামের কথাও উঠে এসেছে তার কবিতায়।
একে একে ‘অমীমাংসিত রমণী’, ‘দীর্ঘ দিবস দীর্ঘ রজনী’, ‘চৈত্রের ভালোবাসা’, ‘ও বন্ধু আমার’, ‘বাংলার মাটি বাংলার জল’, ‘তার আগে চাই সমাজতন্ত্র’, ‘চাষাভুষার কাব্য’, ‘অচল পদাবলী’, ‘পৃথিবীজোড়া গান’, ‘দূর হ দুঃশাসন’, ‘নিরঞ্জনের পৃথিবী’, ‘চিরকালের বাঁশি’, ‘দুঃখ করো না, বাঁচো’- এমন অসংখ্য কাব্যগ্রন্থ রচনা করে তিনি সমৃদ্ধ করে চলেছেন বাংলা সাহিত্যকে। তার রচিত আত্মজীবনী ও স্মৃতিচারণমূলক গ্রন্থগুলোও পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে।
২০১৬ সালে সাহিত্যে সামগ্রিক অবদানের জন্য তিনি স্বাধীনতা পদক পেয়েছেন। এর আগে ২০০১ সালে সাহিত্যে অবদানের জন্য একুশে পদক এবং ১৯৮২ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
শুধু কবিতা রচনাতেই সীমাবদ্ধ নন নির্মলেন্দু গুণ। অবসরে ছবিও আঁকেন তিনি। ২০০৯ সালে শাহবাগে জাতীয় গণগ্রন্থাগারের সামনে তার চিত্রকর্মের একটি প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
নিজের সম্পর্কে কবি নির্মলেন্দু গুণ বলেন, আমার যা বলবার স্পষ্ট করেই আমি তা বলবার চেষ্টা করি। যা কঠিন, আমার মন তাতে সহজে সাড়া দেয় না, সহজ করে পাওয়ার মধ্যে একটা আনন্দ আছে। চারপাশের কঠিনের ভিড়ে আমি তাই সহজ করে বলতে জানি।