বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ২৮ কার্তিক ১৪৩২, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭, হেমন্তকাল

ঐকমত্য কমিশনকে প্রধান উপদেষ্টার অভিনন্দন

কলিকাল প্রতিনিধি

ছবি : সংগৃহীত

সাফল্যের সঙ্গে জুলাই জাতীয় সনদ তৈরি করায় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এ দেশের ভবিষ্যৎ নির্মাণে আমাদের সামনে মহা চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা কোনো একক ব্যক্তি, একক সংগঠন, একক সংস্থা অথবা একক সরকার দিয়ে সম্ভব হবে না। এজন্য সব রাজনৈতিক দল ও পক্ষের মধ্যে একতা থাকতে হবে, যত প্রতিকূলতাই আসুক না কেন ঐক্য ধরে রাখতে হবে।

শনিবার (১ নভেম্বর) রাতে প্রধান উপদেষ্টা বরাত দিয়ে এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার সহকারী প্রেস সচিব সুচিস্মিতা তিথি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে একটি স্থায়ী জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় কাঠামোগত সংস্কারের লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সভাপতি করে চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি ঐকমত্য কমিশনের যাত্রা শুরু হয়। গতকাল ৩১ অক্টোবর এর মেয়াদ শেষ হয়।

অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বরাতে সুচিস্মিতা তিথি বলেন, জুলাই জাতীয় সনদ আমাদের ঐতিহাসিক অর্জন। এই সনদ আমাদের জাতির এক মূল্যবান দলিল, যা আমাদের আগামী জাতীয় নির্বাচনের পথকে কেবল সুগমই করবে না, জাতীয় রাজনীতির ভবিষ্যৎ পথনির্দেশক হিসেবে কাজ করবে। আমাদের গণতন্ত্রকে সুসংহত করবে।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, জনগণ প্রত্যাশায় আছে জাতীয় জীবনে এমন কিছু পরিবর্তন দেখার জন্য, যা বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিকাশ ঘটাবে। এমন কিছু পরিবর্তন, যা এ দেশে আর কখনো কোনো স্বৈরাচারের আগমন ঘটতে দেবে না। এমন কিছু পরিবর্তন, যা আমাদের জাতীয় জীবনে সামগ্রিক উন্নয়ন ঘটাবে, সবার নাগরিক অধিকার ও মর্যাদা রক্ষা করবে।

তিনি বলেন, সবচেয়ে আশার কথা হচ্ছে, আমরা নিজেরাই এই সংস্কার প্রক্রিয়াগুলো নিয়ে কাজ করেছি, একমত হয়েছি। বাইরের কেউ আমাদের ওপর কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়নি। অতীতে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে যেসব রাজনৈতিক সংলাপ হয়েছে তাতে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে আমরা বিদেশিদের আসতে দেখেছি। বন্ধু রাষ্ট্রসহ জাতিসংঘের প্রতিনিধি বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে এক টেবিলে আনার চেষ্টা করেছেন। তবে জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে যে আমাদের নিজেদের সংকট নিজেদেরই সমাধান করতে হবে। এ কারণেই সব রাজনৈতিক দল এক কাতারে এসেছে, রাজনৈতিক বিতর্কে অংশ নিয়েছে এবং আমাদেরকে সমাধানের পথ দেখিয়েছে। বিশ্ববাসীকে বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংকট সমাধানে আমন্ত্রণ জানানোর পরিবর্তে আমরা নিজেরাই বিশ্ববাসীর দরবারে আমাদের জাতীয় ঐক্যকে তুলে ধরেছি।

বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দলকে এবং তাদের নেতৃবৃন্দকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, রাজনৈতিক দলের নেতারা যারা এই সনদ তৈরিতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন তাদের সবাইকে আমি জাতির পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই। এই জুলাই সনদ সারাবিশ্বের জন্যই একটি অনন্য দৃষ্টান্ত। পৃথিবীর আর কোথাও এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। এটা পৃথিবীর রাজনৈতিক ইতিহাসে এক উজ্জ্বল ঘটনা হয়ে থাকবে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশও সংকটকালীন দেশ গঠনের পদক্ষেপ হিসেবে ‘ঐকমত্য কমিশন’ গঠনের কথা বিবেচনা করবে।

এসময় প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক ও ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া এবং বিশেষ সহকারী মনির হায়দারকে ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি, গণমাধ্যমের প্রতিনিধি যারা মাসের পর মাস এই দীর্ঘ আলোচনার সঙ্গে থেকেছেন, ঐকমত্য কমিশনের সব কার্যকলাপ মানুষের কাছে সহজ ভাষায় পৌঁছে দিয়েছেন- তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান প্রধান উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, আমাদের সবার মনে রাখতে হবে, যে অভূতপূর্ব ঐক্য আমাদের মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্র সংস্কারে, এই জাতীয় ঐক্য আমাদের ধরে রাখতেই হবে। কারণ ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠী এ জাতিকে বিভক্ত করতে সর্বশক্তি নিয়োজিত করেছে। গত ১৫ মাস আমরা তাদের নানান ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করেছি। ফ্যাসিবাদকে পরাস্ত করতে হলে, এই দেশকে বাঁচাতে হলে জাতীয় ঐক্য ধরে রাখা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।

মন্তব্য করুন

এ বিভাগের আরও খবর

ফটোগ্যালারী

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০  
কলিকাল | সত্য-সংবাদ-সুসাংবাদিকতা
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.