দেশে অনেক ফ্যাসিস্ট ইনটেলেকচুয়াল আছে, যারা নানা ধর্মের মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার ক্ষেত্রে সর্বদা বদ্ধপরিকর। তা যেন কেউ নস্যাৎ না করতে পারে সে বিষয়ে সাবধান থাকতে হবে।
আজ শুক্রবার (১০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ঢাকা আশুলিয়ায় বোধিজ্ঞান ভাবনা কেন্দ্রে ‘কঠিন চীবর দানোৎসব’ অনুষ্ঠানে এ কথা জানান তিনি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সাম্প্রদায়িকতা নষ্ট করতে সম্প্রতি দুর্গাপূজায় অসুরের মুখে যারা দাড়ি লাগিয়ে পূজার আয়োজন করেছিল তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। বিচ্ছিন্ন এমন কিছু ঘটনায় হিন্দু ধর্মের অনেকেই দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
এসময় কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠানে সবার মাঝে অত্যাচার অনাচার বন্ধ করার বোধ জাগ্রত হোক। সবাইকে বিশ্ব মানবতার জন্য কাজ করার আহ্বান জানান।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বৌদ্ধ ধর্ম ও দর্শন চর্চা এবং প্রচার-প্রসারের ক্ষেত্রে পূর্ব এশিয়া তথা বিশ্বজুড়ে স্মরণীয় নাম অতীশ দীপঙ্কর। তিব্বতীরা তাকে অতীশ উপাধিতে ভূষিত করেন, যার অর্থ ‘শান্তি’। তিনি একাধারে ধর্মগুরু, শিক্ষক, পণ্ডিত, লেখক, দার্শনিক, বিতার্কিক এবং বাগ্মী। বাংলাদেশের সন্তান হিসেবে মনীষী অতীশ দীপঙ্করের কীর্তি ও বিশ্বজোড়া খ্যাতিতে আমরা গর্বিত। তার জ্ঞান, দর্শন, ধর্মচর্চা, কর্ম, শিক্ষা আমাদের সারাদেশে আরো বিস্তৃত পরিসরে ছড়িয়ে দেয়া প্রয়োজন। সেজন্য তাঁর জন্মভূমি বাংলাদেশে অতীশ দীপঙ্করের নামে একটি আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা করা সময়ের দাবি।
উপদেষ্টা বলেন, বৌদ্ধ ধর্মের মূলনীতি হলো অহিংসা, সাম্য, মৈত্রী ও প্রীতির বন্ধনে সবাইকে আবদ্ধ করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। সে লক্ষ্যে বুদ্ধের অনুসারীরা কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, বুদ্ধের মতে মানুষ মৈত্রীপরায়ণ হবে; মানুষ ক্ষমাশীল হবে এবং আরো হবে লোভ ও মোহহীন। মানুষ মানুষকে শ্রদ্ধা করবে, একে অন্যকে সম্মান করবে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, দেশের সকল বৌদ্ধ বিহারে আশ্বিনী পূর্ণিমার পর হতে কার্তিকী পূর্ণিমা পর্যন্ত মাসব্যাপী কঠিন চীবর দান কর্ম শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
পরে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে উপদেষ্টা বলেন, সকল ধর্মই শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তা প্রচার করে আসছে। আমাদের বাংলাদেশে কোন ধর্মীয় বিভেদ নেই। সবাই শান্তিপূর্ণ ও সহাবস্থানে থেকে নিজ নিজ ধর্ম পালন করে যাচ্ছে। কিন্ত আমাদের দেশের এক শ্রেণির ফ্যাসিস্ট বুদ্ধিজীবীরা সবসময় বিষয়টিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহের চেষ্টা করে থাকে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত শ্রীলঙ্কার হাইকমিশনার ধর্মপাল বীরাক্কোদি, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী দয়াল কুমার বড়ুয়া, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের অ্যাডভোকেট ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শুভাশীষ চাকমা, কর্নেল দিদারুল আলম প্রমুখ।






