শেরপুর জেলার নকলা উপজেলায় তুচ্ছ ঘটনার জেরে মো. শাকিল মিয়া (১৮) নামে এক স্কুলছাত্রের অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত পা কেটে ফেলা হয়েছে।
এবং কেটে ফেলা সেই পা হাতে নিয়ে বিচারের দাবিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন বাবা মো. আমির হোসেন।
গত বুধবার (১৮ জুন) তার ছেলের কাটা পা হাতে নিয়ে নকলা উপজেলার সেনা ক্যাম্প, থানা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ও শেরপুরের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে যান তিনি এবং সংশ্লিষ্টদের কাছে নৃশংস ওই ঘটনার বিচার দাবি করেন।
উল্লেখ্য, গত রোববার (১৫ জুন) নকলা উপজেলার গণপদ্দী ইউনিয়নের বারইকান্দি দক্ষিণপাড়া গ্রামে স্কুলছাত্র সাকিলের ওপর ওই হামলার ঘটনা ঘটে। ঘটনায় পরদিন পার্শ্ববর্তী আদমপুর গ্রামের লালু বাদশার ছেলে মো. হাসিবুল (২০), মো. অন্তিম (২২), ও মো. ইস্রাফিল (৪৯)সহ ৫ জনকে স্বনামে ও অজ্ঞাতনামা আরও ৩/৪ জনকে আসামি করে নকলা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সাকিলের বাবা।
মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সপ্তাহ দুয়েক আগে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নকলা উপজেলার বারইকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণি পড়ুয়া সাকিলের সাথে একই স্কুলের ছাত্র মো. হাসিবুলের কথা কাটাকাটি ও এক পর্যায়ে হাতাহাতি হয়। পরবর্তীতে বিষয়টি স্থানীয়রা মিটমাট করে দেয়।
কিন্তু এরই জের ধরে গত ১৫ জুন রবিবার সন্ধ্যার দিকে সাকিলের উপর অতর্কিত হামলা চালায় হাসিবুলসহ অন্যান্য আসামিরা। ওই সময় সাকিলের হাতে ও বাম পায়ে দা দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে হাসিবুলসহ অন্যরা। পরে সাকিলের ডাক-চিৎকারে তার স্বজন ও স্থানীয়রা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু সাকিলের অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। পরে সেখানে নিয়ে সাকিলের বাম পা হাঁটু থেকে কেটে ফেলা হয়।
ওই ঘটনায় হাসিবুলসহ ৫ জনকে আসামি করে নকলা থানায় মামলা দায়ের করলেও এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। এতে সাকিলের বাবা ও স্বজনরা হতাশ হয়ে সাকিলের কেটে ফেলা পা হাতে নিয়ে পুলিশ, উপজেলা প্রশাসন ও সেনা ক্যাম্পে গিয়ে দেখা করেন এবং বিচার দাবি করেন।
এ বিষয়ে নকলা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবুল কাশেম বলেন– ‘ওই ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। মামলার আসামিদের ধরতে আমরা বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করছি।’