জিএম কাদেরকে ধরতে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

আওয়ামী লীগের দোসর জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ, জিএম কাদেরসহ ফ্যাসিবাদের সহযোগীদের গ্রেফতারের দাবিতে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে গণঅধিকার পরিষদ। এছাড়া বরিশালে দলের নেতাকর্মীদের ওপর জাতীয় পার্টির হামলার প্রতিবাদও জানায় সংগঠনটি। এ সময় জিএম কাদেরকে ধরতে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন তারা।

রোববার (০১ জুন) রাজধানীর পল্টনের আলরাজি কমপ্লেক্সের সামনে গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে। সমাবেশ শেষে একটি মিছিল নিয়ে জাতীয় পার্টির প্রধান কার্যালয়ের সামেন যান সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। সেখান থেকে পুনরায় আলরাজি কমপ্লেক্সের সামনে এসে মিছিলটি শেষ হয়।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার বিচার হলে জিএম কাদেরের কেন বিচার হবেনা? আওয়ামী লীগের মতো জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ও নিবন্ধন স্থগিত করতে হবে।

রাশে খাঁন বলেন, এ দেশের গণতন্ত্র হত্যার জন্য হাসিনা যেভাবে দায়ী, ঠিক একইভাবে জিএম কাদেরও দায়ী। জিএম কাদেরের নামে মামলা হলেও, তাকে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না? উপদেষ্টা পরিষদ বা সরকারের কে জাতীয় পার্টিকে পৃষ্ঠপোষকতা করছে? অন্যথায় কেন জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ হচ্ছে না, মিছিল-মিটিংয়ে বাধা দেয়া হচ্ছে না? জাতীয় পার্টির মিছিল-মিটিংয়ে আওয়ামী লীগ যুক্ত হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

গণঅধিকার পরিষদের এ নেতা বলেন, জিএম কাদের বলেছে, আওয়ামী লীগকে দূরে রেখে নির্বাচন করা যাবে না।  আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা যাবেনা। এখান থেকে প্রমাণ হয়, জিএম কাদের হাসিনার এক নম্বর দোসর। হাসিনা দিল্লি পালিয়েছে, জিএম কাদের কিভাবে এখনও জেলের বাইরে?

বরিশালে গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী ২৪ ঘন্টা মধ্যে দোষীদের গ্রেফতার করুন। অন্যথায় ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের আমরা থামাতে পারব না। এর দায় কিন্তু পুলিশ প্রশাসনকে নিতে হবে। আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে জিএম কাদেরকে গ্রেফতার করুন, অন্যথায় সারাদেশে আন্দোলন শুরু হবে হুশিয়ারি দেন রাশেদ খাঁন।

তিনি আরও বলেন, চা-নাস্তা খাওয়ানোর সংলাপ করবেন না। সংলাপ ফলপ্রসূ করতে সিদ্ধান্ত জানান। বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রকাশ করুন। আমাদের দাবি, আগামী সেপ্টেম্বরে তফসিল ও ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করুন। বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন একে-অপরের পরিপূরক। কোনটাকে কোনটার মুখোমুখি করে ধোঁয়াশা করবেন না। আগামীকাল সংলাপ থেকে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন। নির্বাচনের আগে অবশ্যই ঐক্যমতের ভিত্তিতে সংস্কার ও গণহত্যার পথনকশা প্রকাশ করুন।

এ সময় গণঅধিকার পরিষদের মুখপাত্র ফারুক হাসান বলেন, জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রধান দোসর। আ.লীগ নিষিদ্ধ হলেও জাতীয় পার্টি এখনও বহাল তবিয়তে। আমরা খবর পেয়েছি, সরকারের ৩ জন উপদেষ্টা (আদিলুর রহমান, রেজওয়ান হাসান ও মাহফুজ আলম) জাতীয় পার্টিকে টিকিয়ে রেখেছে। তারা আ.লীগকে জাতীয় পার্টির মাধ্যমে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চায়। আমরা গণঅধিকার পরিষদ পরিষ্কারভাবে বলছি, জাতীয় পার্টি আজ থেকে নিষিদ্ধ, যেখানেই পাওয়া যাবে সেখানে প্রতিরোধ হবে।

এতে সভাপতিত্ব করেন গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দীন। সাধারণ সম্পাদক নুরুল করিম শাকিলের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ আবু হানিফ, আব্দুজ জাহের,মাহফুজুর রহমান খান, রবিউল হাসান, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান, ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নেওয়াজ খান বাপ্পী প্রমুখ।

মন্তব্য করুন

এ বিভাগের আরও খবর

ফটোগ্যালারী

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার