বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ২৮ কার্তিক ১৪৩২, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭, হেমন্তকাল

দুপুরে খাওয়ার পর ঘুম আসার কারণ জেনে নিই

কলিকাল প্রতিনিধি

ছবি : সংগৃহীত

রোজ দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পরেই চোখে ঘুম চলে আসে, শরীরে নেমে আসে ক্লান্তি। বিশেষ করে খাবার যদি একটু ভারী হয়, তখন যেন চোখ খোলা রাখাই কষ্টকর হয়ে ওঠে। কিন্তু কেন এমন হয়?

খাওয়ার পরে দেহে ইনসুলিনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। ইনসুলিন বাড়লে শরীরে কিছু হরমোন সক্রিয় হয়, যেগুলো ঘুম ও বিশ্রামের বার্তা বহন করে। দীর্ঘদিন ধরে ধারণা ছিল- এই হরমোনগুলো মস্তিষ্কে গিয়ে সেরোটোনিন ও মেলাটোনিনে রূপান্তরিত হয়, সেই কারণেই ঘুম পায় ও আলস্য বাড়ে।

তবে নতুন গবেষণা বলছেন এর পেছনে আরো একটি কারণ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) গবেষকেরা জানিয়েছেন, দুপুরের দিকে অতিরিক্ত ক্লান্তি ভাবের জন্য দায়ী হতে পারে মস্তিষ্কের ভেতর থাকা বিশেষ তরল সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড (সিএসএফ)। এই তরলটি মস্তিষ্কের স্নায়ুকেন্দ্রে প্রভাব ফেলতে পারে, ফলে খাওয়ার পর ক্লান্তি ও ঘুম ভাব বাড়তে পারে।

গবেষক লরা লুইস জানিয়েছেন, এই তরল মস্তিষ্ক ও মেরুদণ্ডকে সুরক্ষা দেয় এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে। কিন্তু এর ক্ষরণ অনিয়মিত হয়ে গেলে স্নায়বিক দুর্বলতা বেড়ে যায়। ফলে খাওয়ার পর ক্লান্তি ও ঘুমভাব তীব্র হয়।

দুপুরে খাওয়ার পর ঘুম নিয়ে এমআইটির গবেষণায় নতুন ব্যাখ্যা :

সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইডের ক্ষরণ কেন অনিয়মিত হয়, তার অন্যতম কারণ হলো ঘুমের ঘাটতি। বেশি রাত জাগা বা পর্যাপ্ত না ঘুমালে শরীরের স্বাভাবিক জৈবিক ঘড়ি বা বায়োলজিক্যাল ক্লক ব্যাহত হয়। মানবদেহের জন্য রাতে টানা ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম অত্যন্ত জরুরি।,কারণ এই সময়েই মস্তিষ্কে ‘ডিটক্স’ প্রক্রিয়া চলে। ঘুমের সময় সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড মস্তিষ্কে জমে থাকা বর্জ্য পদার্থ পরিষ্কার করে। যত গভীর ঘুম হয়, তত বেশি পরিষ্কার প্রক্রিয়াটি কার্যকর হয়।

কিন্তু যারা রাতে পর্যাপ্ত ঘুমান না, রাত জেগে মোবাইল বা ল্যাপটপ ব্যবহার করেন তাদের মস্তিষ্ক ঐ তরল ঠিকমতো বর্জ্য পরিষ্কার করতে পারে না, মস্তিষ্কে বর্জ্য জমে থাকে। সেই জমে থাকা বর্জ্য পরিষ্কারের কাজ দুপুরের দিকে শুরু হয় । তাই দুপুরের দিকে স্নায়ু একটু ঢিলে হয়ে যায়, মনোযোগ কমে যায়, শরীর ভারী লাগে ও ঘুম পেতে থাকে।

গবেষণায় আরো বলা হয়েছে, রাতে কম ঘুম হলে শুধু ক্লান্তিই নয়, দীর্ঘমেয়াদে স্নায়বিক সমস্যা তৈরি হতে পারে। যারা নিয়মিত রাত জাগেন, তাদের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিনাশ, ব্রেন ফগ, হার্টের রোগ, এমন কি মুড ডিজঅর্ডারের ঝুঁকিও বেড়ে যায়।

তাই ঘুমের চক্র স্বাভাবিক রাখা খুব জরুরি। প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং একই সময়ে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস শরীরের জৈবিক ঘড়িকে সঠিক রাখে। এতে দুপুরের ক্লান্তি কমে, মনোযোগ বাড়ে, ভবিষ্যতের জটিল রোগ থেকেও দূরে থাকা যায়।

সূত্র: এমআইটি নিউজ, দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট ও অন্যান্য

মন্তব্য করুন

এ বিভাগের আরও খবর

ফটোগ্যালারী

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০  
কলিকাল | সত্য-সংবাদ-সুসাংবাদিকতা
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.