শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ২৯ কার্তিক ১৪৩২, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭, হেমন্তকাল

ভোট নিয়ে তোড়জোড়, যমুনায় সমন্বয় সভা

কলিকাল প্রতিনিধি

ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকারের মনোযোগ এখন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিকে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আশা করছেন জাতিকে একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দেওয়ার। শুধু আশা নয়, তিনি দেশে ও দেশের বাইরে মিডিয়ার কাছে সাক্ষাৎকারেও বলেছেন, তিনি জাতিকে একটি নজিরবিহীন সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে চান। যেন সারা বিশ্ব দেখে দীর্ঘদিন পর বাংলাদেশে একটি ভালো ও সুন্দর নির্বাচন হচ্ছে।

জাতীয় নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই যেন সরকারের ব্যস্ততা ঘুরপাক খাচ্ছে নির্বাচনকেন্দ্রিক কার্যক্রমকে ঘিরে। নির্বাচন কমিশন থেকে শুরু করে গুরত্বপূর্ণ প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে নির্বাচন নিয়ে। বিশেষ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখন প্রতিনিয়ত বৈঠক করছে। একই সঙ্গে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ও কাজ করছে। আর নির্বাচন কমিশনের যেন এখন দম ফেলার সুযোগও নেই।

নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি জানার আগ্রহ প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের। সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে আজ সকাল সাড়ে ১০টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক আহ্বান করেছেন তিনি। প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকটি মূলত সমন্বয় সভায় পরিণত হতে যাচ্ছে। যেখানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, ঢাকা সেনানিবাসের সশস্ত্র বিভাগের প্রিন্সিপ্যাল স্টাফ অফিসার, ডিজিএফআইপ্রধান, পুলিশের আইজিপি, বর্ডার গার্ড অব মহাপরিচালক, এনএসআইপ্রধান, বাংলাদেশ আনসার মহাপরিচালক, গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীপ্রধান, র‌্যাবের মহাপরিচালক, পুলিশের বিশেষ শাখাপ্রধান। এ ছাড়া স্বরাষ্ট্র সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়সহ আরও অনেকে উপস্থিত থাকার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, নির্বাচনের আগে এই প্রথম একটি সভা হতে যাচ্ছে যার মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইবেন। এর মধ্যে রয়েছে- ভোটগ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সংগ্রহের সর্বশেষ পরিস্থিতি, ভোটকেন্দ্রের সার্বিক অবস্থা, ভোটগ্রহণের ক্ষেত্রে ভোটারদের নিরাপদ ব্যবস্থা। এ ছাড়া ভোটগ্রহণ শেষে নিরাপদে ব্যালট বাক্স নির্বাচন কমিশনকে বুঝিয়ে দেওয়ার বিষয়টি গুরত্ব পাবে।

নির্বাচন কমিশনের অন্য এক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছেন, নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার পর থেকে জনপ্রশাসন থেকে শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর রদবদল- সব কিছু নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। এরপর কেউ আর সহজে রদবদলের ব্যাপারে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। তবে রাজনৈতিক দলের মতামতকে গুরত্বসহকারে বিবেচনা করা হবে।

জানা গেছে, নির্বাচন কমিশন মঙ্গলবার নির্বাচন নিয়ে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা করেছে। সেই সভায় কার কী দায়িত্ব সে বিষয়ে পর্যালোচনা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সামনে কে কীভাবে বিষয়গুলো উপস্থাপন করবেন তার একটি পথরেখা দেওয়া হয়েছে। যেহেতু সভাটি সমন্বয় সভা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে সে কারণে প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছে।

জনপ্রশাসনের সিনিয়র সচিব মো. এহছানুল হক স্বীকার করেন প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে সভার বিষয়টি। সকাল সাড়ে ১০টায় যমুনা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনের সভার একটি নোটিস পেয়েছেন। যেখানে স্বাক্ষর করেছেন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াদুদ।

জানা গেছে, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সার্বিক নির্বাচনের প্রস্তুতির হালনাগাদ জানতে চাইবেন। একই সঙ্গে তিনি বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের কাজের অগ্রগতি নিয়ে পর্যালোচনা করবেন। এর মধ্যে নির্বাচনের আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রচারের সমান সুযোগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সার্বিক প্রস্তুতি, ভোটারদের জন্য নিরাপদ ব্যবস্থা। এ ছাড়া সভায় গত পাঁচ আগস্টের আগে ও পরে পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্রসহ সব অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার নিয়ে বিষয়টি গুরুত্ব পেতে পারে। এ ছাড়া জুলাই সনদ প্রশ্নে গণভোটের তারিখ নিয়েও আলোচনা হতে পারে। তবে একেক জনের এজেন্ডা নিয়ে আলাপ হবে বলে আভাস পাওয়া গেছে।

মন্তব্য করুন

এ বিভাগের আরও খবর

ফটোগ্যালারী

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

কলিকাল | সত্য-সংবাদ-সুসাংবাদিকতা
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.