বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ২৮ কার্তিক ১৪৩২, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭, হেমন্তকাল

পারস্পরিক বাণিজ্য ও আঞ্চলিক সহযোগিতায় একমত বাংলাদেশ-পাকিস্তান

কলিকাল প্রতিনিধি

ছবি : সংগৃহীত

অবশেষে প্রায় দুই দশক পর বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে নবম জয়েন্ট ইকোনমিক কমিশন (জেইসি) বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০০৫ সালের পর এ ধরনের উচ্চপর্যায়ের অর্থনৈতিক বৈঠক আর হয়নি। তাই এবারের সভাটিকে দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে দেখা হচ্ছে।

আজ সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে উভয় পক্ষই পারস্পরিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের বিষয়ে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

কৃষি, বাণিজ্য, তথ্যপ্রযুক্তি, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, জ্বালানি, বিমান ও সমুদ্র যোগাযোগসহ নানা খাতে সহযোগিতার দিকগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দুই দেশের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বলেন, এই কমিশনের লক্ষ্য শুধু দুটি দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক নয়, বরং জনগণের পারস্পরিক কল্যাণ ও আঞ্চলিক উন্নয়নকে এগিয়ে নেওয়া। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বৈঠকে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, এই সভা কেবল দুটি দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়ন নয়— এটি জনগণের কল্যাণের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। কৃষি, ট্রেড, কমার্স, আইটি, অ্যাগ্রিকালচার ও ফুড— প্রতিটি খাতেই এমন কিছু আলোচনা হয়েছে যা সরাসরি দুই দেশের মানুষের উপকারে আসবে।

তিনি বলেন, আমরা কেবল দ্বিপক্ষীয় নয়, আঞ্চলিক সহযোগিতার দিকেও যেতে চাই। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো যদি পারস্পরিকভাবে সহযোগিতা করতে পারে, তাহলে পুরো অঞ্চলের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।” বৈঠকে দুই দেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থাগুলোর মধ্যে বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরের বিষয়ে আলোচনা হয়। বিশেষ করে কৃষি, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, তথ্যপ্রযুক্তি, শিক্ষা, বাণিজ্য ও জ্বালানি খাতে পারস্পরিক গবেষণা এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়ের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। বিমান ও সমুদ্র যোগাযোগ, বাণিজ্যিক সংযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে আরও শক্তিশালী করার বিষয়েও উভয় পক্ষ আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

বৈঠকে পাকিস্তানের প্রতিনিধি পেট্রোলিয়াম মিনিস্টার আলী পারভেজ মালিক বলেন, বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ এক বিলিয়ন ডলারেরও কম, যা দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনার তুলনায় খুবই সামান্য। তিনি বলেন, আমাদের জনগোষ্ঠী বিশাল এবং একে অপরকে অর্থনৈতিকভাবে পরিপূরক করে। আমরা চাই, দুই দেশের ট্রেড ভলিউম আরও বাড়ুক। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ থেকে কৃষিপণ্য, ফার্মাসিউটিক্যাল এবং অন্যান্য শিল্পপণ্য আমদানির সুযোগ বাড়ানোর পাশাপাশি আমরা কৃষি ও জ্বালানি খাতে নতুন সহযোগিতার ক্ষেত্র খুঁজে বের করব।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এই বৈঠক একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে। তারা বিশ্বাস করেন, বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত ও আলোচনাগুলো দ্রুত বাস্তবায়িত হলে দুই দেশের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হবে এবং দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সংযোগ জোরদার হবে। বৈঠকের শেষে উভয় পক্ষই একে অপরের আতিথেয়তা ও সহযোগিতার প্রশংসা করেন। পাকিস্তানের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, দীর্ঘদিন পর এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হওয়ায় আমরা আশাবাদী যে এটি দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্ককে নতুন মাত্রা দেবে। আমাদের লক্ষ্য হবে এই ইতিবাচক ধারা ধরে রেখে বাস্তব অগ্রগতি নিশ্চিত করা।

বাংলাদেশের পক্ষ থেকেও বলা হয়, জয়েন্ট ইকোনমিক কমিশনের এই সভা কেবল দুই দেশের সম্পর্ক নয়, বরং পুরো অঞ্চলের সহযোগিতার নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে দিয়েছে।

মন্তব্য করুন

এ বিভাগের আরও খবর

ফটোগ্যালারী

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

কলিকাল | সত্য-সংবাদ-সুসাংবাদিকতা
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.