শামসুর রাহমান। একাধারে তিনি কবি ও সাংবাদিক। ১৯২৯ সালের ২৩ অক্টোবর পুরান ঢাকার ৪৬ নম্বর মাহুতটুলীতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক বাড়ি ঢাকা জেলার রায়পুরা থানার পাড়াতলী গ্রামে। পিতা মোখলেসুর রহমান চৌধুরী এবং মাতা আমেনা খাতুন। শামসুর রাহমান বিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে বাংলা সাহিত্যের অন্যতম কবি হিসেবে খ্যাত।
ঢাকার পোগোজ স্কুল থেকে ১৯৪৫ সালে ম্যাট্রিকুলেশন এবং ১৯৪৭ সালে ঢাকা কলেজ থেকে আইএ পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন। কিন্তু তিনি অনার্স ফাইনাল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেননি। তবে তিনি ১৯৫৩ সালে বিএ পাস করেন।
১৮ বছর বয়সে শামসুর রাহমান প্রথম কবিতা লেখা আরম্ভ করেন। ১৯৪৩ সালে তার প্রথম কবিতা ‘উনিশশ ঊনপঞ্চাশ’ প্রকাশিত হয় নলিনীকিশোরগুহ সম্পাদিত সোনার বাংলা পত্রিকায়। ১৯৬০ সালে তার প্রথম কাব্য, ‘প্রথম গান দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে’র প্রকাশ কবিতায় তার অধিকার প্রতিষ্ঠা করে।
তিনি ১৯৫৭ সালে সাংবাদিকতা জীবন শুরু করেন ইংরেজি দৈনিক মর্নিং নিউজের সহ-সম্পাদক হিসেবে। কয়েক দিন এ পত্রিকায় কাজ করার পর তিনি পেশা পরিবর্তন করে যোগ দেন রেডিও পাকিস্তানে। কিন্তু রেডিওতে অনুষ্ঠান প্রযোজকের কাজেও তিনি স্বস্তিবোধ করেননি। ১৯৬৪ সালে মর্নিং নিউজে উচ্চতর পদে যোগ দেন। তিনি দৈনিক বাংলা ও সাপ্তাহিক বিচিত্রার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৭ সালে তিনি পদত্যাগ করেন। তার সাংবাদিক জীবনের সমাপ্তি ঘটে।
৬০টি কাব্যের প্রতিটিতেই তিনি কয়েকটি কবিতা উপহার দিয়েছেন, যা রসোত্তীর্ণ। বাংলা সাহিত্যে অবদানের জন্য শামসুর রাহমান আদমজী পুরস্কার, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশে পদক, পদাবলি পুরস্কার, স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হন। সাংবাদিকতায় অবদানের জন্য ১৯৮২ সালে তিনি জাপানের মিতসুবিশি পুরস্কার পান। ১৯৯৪ সালে কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকা তাকে আনন্দ পুরস্কারে ভূষিত করে। ২০০৬ সালের ১৮ আগস্ট তিনি মারা যান।






