বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ২৮ কার্তিক ১৪৩২, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭, হেমন্তকাল

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে

সুপর ওভারে হেরে গেল বাংলাদেশ

ক্রীড়া ডেস্ক

ছবি : সংগৃহীত

এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ জিততে চেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু তা হতে দেয়নি সফরকারি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। রুদ্ধশ্বাস সুপার ওভারে স্বাগতিকদের হারিয়ে সিরিজে সমতা ফিরিয়েছে ক্যারিবীয়নরা। তার আগে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২১৩ রান সংগ্রহ করে টাইগাররা। জবাবে ২১৪ রানের জয়ের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৯ উইকেটে সামান ২১৩ রান করে উইন্ডিজরা। ফলে ম্যাচ টাই হয়ে খেলা গড়ায় সুপার ওভারে।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার টানটান উত্তেজনার দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচটি গড়ায় সুপার ওভারে। শেষ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রয়োজন ছিল ৫ রান। অন্যদিকে বাংলাদেশের ২ উইকেট অথবা এ রান করতে না দেয়া। মেহেদী হাসান মিরাজ শেষ ওভারে বল তুলে দিয়েছিলেন সাইফ হাসানের হাতে। সাইফ প্রথম দুই বল ব্যাটেই লাগাতে পারেননি আকিল হোসাইন। পরের দুই বলে দুটি সিঙ্গেল। পঞ্চম বলে আকিল বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে হয়ে যান বোল্ড। শেষ বলে সাইফ পেতে পারতেন আরেকটি উইকেট। তবে স্কয়ার লেগে সে ক্যাচ নিতে পারেননি উইকেটরক্ষক ব্যাটার নুরুল হাসান সোহান। দুই রান নিয়ে ম্যাচ টাই করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

সুপার ওভারে ব্যাট করতে নামেন মূল ইনিংসে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেয়া শাই হোপ সঙ্গে শেরফানে রাদারফোর্ড। আর বাংলাদেশের হয়ে বোলিং করতে নামেন মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি দ্বিতীয় বলেই আউট করেন রাদারফোর্ডকে। মোস্তাফিজের বলে ডিপ পয়েন্টে তিনি ক্যাচ দেন সাইফ হাসানের হাতে। চতুর্থ বলে হোপ ক্যাচ উঠিয়েছিলেন শর্ট এক্সট্রা কাভারে। সে ক্যাচ নিতে পারেননি মিরাজ। শেষ বলে মোস্তাফিজ চার হজম করলে বাংলাদেশের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১১ রানের।

বাংলাদেশের হয়ে সুপার ওভারে ব্যাট করতে নামেন সৌম্য সরকার ও সাইফ হাসান। শুরুতেই ওয়াইড থেকে আসে ১ রান। পরের বলটি হয় নো। সে বলে সৌম্য নেন দুই রান। পরের ফ্রি হিট বলে আবার এক রান। দ্বিতীয় বলে ডটের পর আরেকটি সিঙ্গেল। ৩ বলে বাংলাদেশের দরকার ছিল ৫ রান। চতুর্থ বলে সৌম্য ক্যাচ দিয়ে আউট হয়ে যান। ফলে দুই বলে পাঁচ রানের দরকার হয়। নতুন ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্ত এক রান নিলেও তা যথেষ্ঠ ছিল না। শেষ বলে ১ রান নেয় বাংলাদেশ। ফলে ম্যাচ ২ রানে হেরে যেতে হয় টাইগারদের।

ম্যাচে টানা ৫০ ওভার স্পিনারদের দিয়ে বোলিং করিয়ে রেকর্ডে নাম লেখায় পেস বোলারদের আঁতুড়ঘর হিসেবে খ্যাত ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তাদের স্পিন আক্রমণ সামলেই রিশাদ হোসেনের দারুণ এক ক্যামিওতে ৭ উইকেটে ২১৩ রানের পুঁজি পায় বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজও সমানে সমান টক্কর দিয়েছে। তবে ম্যাচ জিততে পারেনি। টাই করেই শুরুতে সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাদের। তারা ৫০ ওভার শেষে ৮ উইকেটে ২১৩ রান সংগ্রহ করে।

এদিন ব্যাট হাতে ঝলকের পর বল হাতেও রিশাদের ঝলক দেখা গেছে। এমনকি ফিল্ডিংয়েও তিনি ছিলেন দুর্দান্ত। তবে তাও বাংলাদেশকে ম্যাচ জেতানোর জন্য যথেষ্ঠ ছিল না। বাংলাদেশের দেয়া মাঝারি লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইনিংসের তৃতীয় বলেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ হারায় ব্রেন্ডন কিংয়ের উইকেট। প্রথম ওভারেই বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দেন দ্বিতীয় ওয়ানডের আগে হুট করে দলে ঢোকা নাসুম আহমেদ। এরপর অ্যালিক আথানেজ ও কেসি কার্টি মিলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দেন।

২৮ রান করা আথানেজকে ফিরিয়ে ৫১ রানের জুটি ভাঙেন রিশাদ। কার্টি করেছেন ৫৯ বলে ৩৫ রান। মাঝে শাই হোপ একা ক্যারিবিয়ানদের ইনিংস টেনেছেন। অষ্টম উইকেটে হোপের সঙ্গে জাস্টিন গ্রেভস ৪৪ রানের জুটি গড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়ের আশা বাঁচিয়ে রাখেন। এই জুটি ভেঙেছে রান আউটে। গ্রেভস ফেরেন ৩৯ বলে ২৬ রান করে।

হোপ ৬৫ বলে একপ্রান্ত আগলে রেখে তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। তিনি ৬৭ বলে ৫৩ ও খারি পেয়েরে ২ রানে অপরাজিত থেকে ম্যাচ টাই করেন। শেষ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রয়োজন ছিল ৫ রান। তবে সেই হাসান শেষ ওভার করতে এসে শেরফানে রাদারফোর্ডের উইকেট তুলে নেন। তবে রান চার খরচ করলে ম্যাচ টাই হয়ে যায়। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন রিশাদ, আর দুটি করে উইকেট নেন তানভির ও নাসুম।

এর আগে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশও প্রত্যাশিত শুরু পায়নি। ৪১ রানের মধ্যেই ফিরে যান সাইফ হাসান ও তাওহীদ হৃদয়। এরপর একপ্রান্ত আগলে রেখে খেলেছেন সৌম্য সরকার। তাকে বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্তও। মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনও আউট হয়েছেন ১৭ রান করে। সৌম্য ছাড়া উপরের সারির পাঁচ ব্যাটারের চারজনই বিশের আগে ফেরেন সাজঘরে।

সৌম্য পেতে পারতেন হাফ সেঞ্চুরি। তিনি ৮৯ বলে করেন ৪৯ রান। এদিন প্রমোশন দিয়ে নুরুল হাসান সোহানের আগে নামানো হয় নাসুমকে। তিনি ২৬ বলে ১৪ রানের বেশি করতে পারেননি। সোহান ভালো শুরু পেলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। তিনি আউট হন ২৪ বলে ২৩ রান করে।

বাংলাদেশের সংগ্রহ দুইশ পার করতে বড় ভূমিকা রেখেছেন রিশাদ। তিনি ৯ নম্বরে নেমে ১৪ বলে খেলেছেন ৩৯ রানের দারুণ এক ক্যামিও। এর মধ্যে ছিল ৩টি ছক্কা ও চার। আর তাতেই লড়াইয়ের পুঁজি পায় বাংলাদেশ। মিরাজ শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ৫৮ বলে ৩২ রান করে।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ৬৫ রান খরচায় ৩ উইকেট নেন গুড়াকেশ মোতি। দুটি করে উইকেট নেন আকিল হোসেন এবং আথানেজ। তিনটি মেডেন দিয়ে মাত্র ১৪ রান খরচা করেন আথানেজ। বাংলাদেশের বিপক্ষে স্পিন বোলিংয়ে ১০ ওভার বোলিং করে সবচেয়ে কিপটে বোলিংয়ের রেকর্ড এখন তার। পেছনে পড়ে গেছে মোহাম্মাদ হাফিজের ১০ ওভারে ১৫ রানের রেকর্ড।

 

মন্তব্য করুন

এ বিভাগের আরও খবর

ফটোগ্যালারী

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

কলিকাল | সত্য-সংবাদ-সুসাংবাদিকতা
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.