‘শাপলা’ প্রতীক নিয়ে একই অবস্থানে রয়েছে সদ্য নিবন্ধন পাওয়া নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
দলটির প্রতীক হিসেবে শাপলা চেয়ে বৃহস্পতিবারও নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেছে এনসিপির একটি প্রতিনিধি দল। টানা দুই ঘণ্টার বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশনকে দুটি অপশন দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারি। একটি হলো হয় এনসিপিকে শাপলা প্রতীক দিতে হবে অন্যথায় প্রতীকের তালিকা থেকে ধানের শীষ, সোনালি আঁশ বাদ দিতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ বলেন, এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার মতো পরিস্থিতিতে নেই। তবে নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, সবকিছু মিলিয়ে আইনগতভাবে আমরা শাপলা প্রতীক দিতে পারি না। এটি আমাদের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত এ সিদ্ধান্তই আছে।
শাপলা প্রতীক নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারি নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ ও যুগ্ম সদস্য সচিব জহিরুল ইসলাম মুসা। আড়াই ঘণ্টার বৈঠক শেষে নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারি বলেন, শাপলার ব্যাপারে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। আশা করি আমরা পাব। এটি না পাওয়ার ক্ষেত্রে আইনি প্রতিবন্ধকতা পাইনি। নির্বাচন কমিশনের সামনে দুটি রাস্তা আছে। একটি হলো ধানের শীষ বাতিল করা অথবা শাপলা দেওয়া। আমরা আশা করি যে, আমাদের যারা ভ্রাতৃপ্রতিম অন্যান্য রাজনৈতিক সংগঠন রয়েছে, আমরা তাদের সঙ্গেও এ বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ, যে কারোটাই বাতিল না হোক। সুতরাং আমরা শাপলা পেতে আইনি বাধা এবং রাজনৈতিক বাধা কোথাও দেখছি না। এ জন্য আমরা আশাবাদী শাপলা পাব। সে বিষয়টা আমরা জানিয়ে এসেছি তাদের। তারা এ বিষয়ে নিশ্চুপ ছিলেন। উত্তর দিতে পারেননি। আমরা ধরে নেব যে তারা এটিতে সম্মতি প্রকাশ করেছেন। যেটি আমরা বিয়ের ক্ষেত্রে দেখি সম্মতি প্রকাশ করে থাকে।
পাটোয়ারি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। আমাদের ব্যাখ্যা চেয়েছে, আমরা ব্যাখ্যা দিয়েছি। আমরা এসে তাদের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছি, কেন শাপলা দেবেন না, তারা দুই ঘণ্টা নিশ্চুপ থেকেছে। এমন কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান আছে বা কোথাও এ ধরনের চিত্র রয়েছে? এ ধরনের চিত্র এখানে আমরা পাচ্ছি যে নির্বাচন কমিশনার বললেন, যে তিনি নাকি মেন্টালি প্রস্তুত আগে যারা নির্বাচন কমিশনার ছিলেন তাদের মতো পরিস্থিতি বরণ করতে, তিনি মেন্টালি প্রস্তুত আছেন। তিনি আরও বলেন, আমরা শাপলার ক্ষেত্রে অনড় আছি, অনড় থাকব। কারণ এটি অধিকার। আপনাদের মাধ্যমে একটা বিষয় আমরা জানান দিতে চাই প্রতীক হিসেবে শাপলা দিতে আইনি প্রতিবন্ধকতা নেই। রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতা নেই। কোথাও প্রতিবন্ধকতা নেই। তা হলে এটি করতে সমস্যা কোথায়? এবং আমরা তাদের আজকে (গতকাল) বলেছি। তারা গত মিটিংয়ে আমাদের ডিজিএফআইয়ের কিছু উদাহরণ দিয়েছিল, বিভিন্ন সংস্থার উদাহরণ দিয়েছিল, সেটিও আমরা বলেছি, যে আপনারা যদি কোথা থেকে প্রেশার ফিল করেন বা কেউ আপনাদের চাপ দিয়ে থাকে, আপনারা আমাদের জানান। নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারি জানান, শাপলা পাওয়ার জন্য তারা গণতান্ত্রিক লড়াই চালিয়ে যাবেন এবং অধিকারের প্রশ্নে কোনো আপস করা হবে না। এই বিষয়টি ‘অনেক দূর গড়ানোর’ সম্ভাবনা রয়েছে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আবদুর রহমানেল মাছউদ সময়ের আলোকে বলেন, আমি বৈঠকে ছিলাম না তাই এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। তবে শাপলা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন কমিশনের অবস্থান জানতে চাইলে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ সময়ের আলোকে বলেন, ‘আমার কাছে বলার মতো কোনো কিছু নেই।’ এ প্রশ্নের উত্তর এই মুহূর্তে দিতে পারছি না। উত্তর দেওয়ার মতো পরিস্থিতিতে নেই। এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার মতো সুযোগ নেই।
এ বিষয়ে আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, আজকে (গতকাল) সকালেও আমরা এ বিষয় নিয়ে বসেছিলাম। সংবিধান, জাতীয় প্রতীক আইন, জাতীয় প্রতীক বিধিমালা, প্রতীক বরাদ্দ নীতিমালা, সংবিধান ও আরপিওসহ সব বিষয়ে প্ঙ্খুানুপুঙ্খ পর্যালোচনা করছি। সবকিছু মিলিয়ে আইনগতভাবে আমরা দিতে পারি না। এটি আমাদের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত এ সিদ্ধান্তই আছে। তাদের (এনসিপি) কথায় কোনো চাপ অনুভব করছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মোটেও না’। যদি তারা (এনসিপি) ইসির সিদ্ধান্ত না মানে তা হলে কী করবেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আগামী সোমবারে আমরা একটা সিদ্ধান্ত জানাব।






