প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস নিউইয়র্কে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় শহরের একটি হোটেলে এ আলোচনা হয়।
দুই নেতার আলোচনায় বাংলাদেশ-ইতালি ব্যবসায়িক ফোরাম ও নিরাপদ অভিবাসনকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। বৈঠকে ইতালির প্রধানমন্ত্রী ডিসেম্বর মাসে ঢাকায় সফরের পরিকল্পনা জানান।
এর আগে, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সাইডলাইনে ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাব এবং পরে স্লোভেনিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দানিলো তুর্কের সঙ্গেও বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা।
এদিকে, জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত “টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যে অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন” শীর্ষক সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ড. ইউনূস। তিনি বিশ্বনেতাদের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) পূরণে আরও কার্যকর অর্থায়নের আহ্বান জানান।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “দারিদ্র্য কাউকে স্বপ্ন থেকে বঞ্চিত করতে পারে না। আমাদের এমন অর্থনীতি গড়তে হবে যেখানে মর্যাদা, অন্তর্ভুক্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত হবে।”
প্রধান উপদেষ্টা পাঁচটি অগ্রাধিকারের কথা তুলে ধরেন, যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্থায়নকে শক্তিশালী করবে। তা হলো-
১. ন্যায্যভাবে দেশীয় সম্পদ উত্তোলন- আন্তর্জাতিক সহায়তার সমর্থন থাকা প্রয়োজন। কর ব্যবস্থা প্রগতিশীল, স্বচ্ছ ও বহুজাতিক করপোরেশনগুলোর ন্যায্য অংশ নিশ্চিত করতে হবে। জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক কর সহযোগিতা কাঠামোর আলোচনায় এই বৈষম্য দূর করতে হবে।
২. নবীন অর্থায়ন ও সামাজিক ব্যবসা যৌক্তিক অর্থায়ন এবং এমন উদ্যোগ যারা লাভ পুনরায় সমস্যার সমাধানে বিনিয়োগ করে, চাকরি, অন্তর্ভুক্তি ও মর্যাদা নিশ্চিত করে।
৩. বিশ্ব আর্থিক কাঠামো ও ঋণ শাসন সংস্কার- উন্নয়নশীল দেশগুলোকে আরও শক্তিশালী কণ্ঠস্বর নিশ্চিত করতে হবে। ঋণকে কঠোরতা নয়, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের হাতিয়ারে রূপান্তর করতে হবে।
৪. স্বচ্ছতা, অবৈধ অর্থায়ন প্রতিরোধ ও নাগরিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা- জনগণ, বিশেষ করে যুবসমাজ, জানতে হবে কীভাবে সম্পদ ব্যবহার হচ্ছে এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
৫. সবচেয়ে দুর্বলদের জন্য বিনিয়োগের ত্বরান্বিতকরণ- স্থিতিশীল বাসস্থান, জলবায়ু-বান্ধব কৃষি, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধান নিশ্চিত করতে হবে।
ড. ইউনূস আরও বলেন, বছরে চার ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থায়নের ঘাটতি পূরণ ছাড়া টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয়।