কলিকাল প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৭ মে ২০২৫ | ৬:১৬ এএম
ছবি : সংগৃহীত
সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫-এর চারটি ধারা বাতিলের দাবিতে সচিবালয়ে টানা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আন্দোলনের মধ্যেই তাদের উদ্দেশে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)–এর দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
তিনি বলেছেন, সচিবালয়ের ভেতর চলতে থাকা ‘ক্যু’ যদি অব্যাহত থাকে, তবে কর্মকর্তাদের পরিণতি হবে ‘পতিত হাসিনার’ মতো।
সোমবার (২৬ মে) বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেয়া পোস্টে হাসনাত লেখেন– ‘জনদুর্ভোগ ও ফ্যাসিবাদ দীর্ঘায়িত করার ক্যান্টনমেন্ট হিসেবে পরিচিত সচিবালয়ের ক্যু সম্পর্কে সচেতন থাকুন। পাঁচ আগস্ট পর্যন্ত কালো ব্যাজ ধারণ করে হাসিনাকে সমর্থন দিয়ে অফিস করা সচিবালয়ের কর্মকর্তারা যদি ক্যু চালিয়ে যান, তাহলে তাদের ভবিষ্যতও হবে হাসিনার মতো। বাংলাদেশের জনগণ সবকিছু পর্যবেক্ষণ করছে। সুতারাং সাবধান।’
একই দিন আরও কঠোর ভাষায় আন্দোলনকারী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ। তিনি বলেন– ‘সরকারের উচিত এসব দুর্নীতিগ্রস্তদের অবিলম্বে অপসারণ করা। নিরপেক্ষ কমিশনের মাধ্যমে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া।’
তিনি আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে লেখেন– ‘আপনারা দুর্নীতি আর লুটপাটের স্বাধীনতা চাচ্ছেন। কিন্তু ২০২৪-পরবর্তী বাংলাদেশে সেটা আর পাবেন না। হাসিনার পুরো শাসনামলে গুম, খুন, দুর্নীতি, অর্থপাচারের সহযোগী আপনারা—পার পাওয়ার সুযোগ নেই।’
গত কয়েকদিন ধরে সচিবালয়সহ সারাদেশে সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫-এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
তাদের দাবি, নতুন অধ্যাদেশে অন্তর্ভুক্ত চারটি ধারা ‘নিবর্তনমূলক’ ও চাকরি হারানোর শঙ্কা তৈরি করছে।
এ চারটি ধারায়:
১. কারণ দর্শানোর নোটিশেই চাকরি থেকে বরখাস্তের সুযোগ
২. বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শাস্তি দেয়ার বিধান
৩. আপিল বা আত্মপক্ষ সমর্থনের সীমিত সুযোগ
৪. শাস্তির বিরুদ্ধে প্রতিকার ব্যবস্থায় অস্পষ্টতা
আন্দোলনকারীরা বলছেন, এসব ধারা চাকরির নিরাপত্তা নষ্ট করছে। প্রশাসনিক স্বেচ্ছাচারিতাকে উৎসাহ দেবে।
তাদের দাবি, মঙ্গলবার (২৭ মে) মধ্যে এসব ধারা বাতিল না হলে সারা দেশে কর্মবিরতি পালন করবেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
গত ২২ মে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন দেয়া হয়। ২৫ মে অধ্যাদেশটি গেজেট আকারে প্রকাশ হয়। তারপর থেকেই বিক্ষোভ করছে তারা।