ক্রীড়া ডেস্ক
প্রকাশ : ২৪ এপ্রিল ২০২৫ | ১০:০৫ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলপ্রেমীদের জন্য একটি বড় ধাক্কা হয়ে এসেছে সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ স্থগিতের ঘোষণা। চলতি বছরের জুনে শ্রীলঙ্কায় কেন্দ্রীয় ভেন্যুতে টুর্নামেন্ট আয়োজনের পরিকল্পনা থাকলেও, আকস্মিকভাবে ২০২৬ সাল পর্যন্ত পুরো আসর স্থগিত করেছে সাউথ এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশন (সাফ)।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক অফিসিয়াল বিবৃতিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানায় সংস্থাটি।
বিবৃতিতে বলা হয়, এবার হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভিত্তিক ফরম্যাটে চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজনের পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু প্রস্তুতির ঘাটতির কারণে সদস্য দেশগুলো এবং মার্কেটিং পার্টনার স্পোর্টস ফাইভ মনে করে এই নতুন ফরম্যাটের জন্য আরও সময় দরকার। সে কারণেই ২০২৬ সাল পর্যন্ত টুর্নামেন্ট স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তবে এ ঘোষণাকে অনেকেই ‘বিস্ময়কর ও অপ্রত্যাশিত’ বলছেন। কারণ চলতি বছরের আসরটি কেন্দ্রীয়ভাবে শ্রীলঙ্কায় আয়োজনের প্রক্রিয়াতেই ছিল, হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ের নয়। সাফ কর্তৃপক্ষ একদিকে হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ের কথা বললেও, বাস্তব প্রস্তুতি ছিল পুরোটাই কেন্দ্রীয় ভেন্যু ঘিরেই। বিষয়টি ঘিরে তৈরি হয়েছে অস্পষ্টতা ও বিভ্রান্তি।
এদিকে এখন পর্যন্ত সদস্য দেশগুলোকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানানো হয়নি বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার বলেন, “আমরা গণমাধ্যম এবং সাফের ওয়েবসাইট থেকে বিষয়টি জেনেছি। সাফ থেকে এখনও আমাদের আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। আমরা জুনে খেলতে প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম।”
ঘটনার আরও অদ্ভুত দিক হচ্ছে, মাত্র কয়েকদিন আগেই সাফ সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন বলেছিলেন, আগামী ২৪ মে নেপালের কাঠমান্ডুতে এক সভায় টুর্নামেন্ট বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কিন্তু সেই নির্ধারিত তারিখের আগেই হঠাৎ স্থগিতের ঘোষণা এলে অনেকে প্রশ্ন তুলছেন- তাহলে পূর্ব ঘোষণাগুলোর ভিত্তি কী ছিল?
ফুটবল সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে এমন প্রতিযোগিতার নিয়মিত আয়োজন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তা না হলে আন্তর্জাতিক ম্যাচের ঘাটতি, খেলোয়াড়দের অনভিজ্ঞতা এবং র্যাংকিংয়ে পতনের ঝুঁকি থেকেই যায়। এই স্থগিতাদেশ তরুণ ফুটবলারদের জন্য হতাশাজনক।
২০২৬ সালেই অনুষ্ঠিত হবে বিশ্বকাপ ফুটবল। ঠিক সেই বছরে সাফ আয়োজন কতটা বাস্তবসম্মত হবে, সেই প্রশ্নও উঠছে এখন। যদিও সাফ বলছে, তারা বিশ্বকাপের উত্তেজনার আবহেই হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভিত্তিতে টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে চায়।
প্রত্যাশিত এক আঞ্চলিক প্রতিযোগিতা এভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য পিছিয়ে যাওয়ায় নানান প্রশ্ন, সমালোচনা ও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে ফুটবল অঙ্গনে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এই সংকট কেবল টুর্নামেন্ট নয়- দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবল কাঠামো ও ব্যবস্থাপনার দুর্বলতাকেই প্রকাশ করছে।