বিদেশি সহায়তা হ্রাসে রোহিঙ্গা সংকট আরও জটিল : প্রধান উপদেষ্টা | কলিকাল
মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ ৩ আষাঢ় ১৪৩২ ২০ জিলহজ ১৪৪৬

মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২, ২০ জিলহজ ১৪৪৬

বিদেশি সহায়তা হ্রাসে রোহিঙ্গা সংকট আরও জটিল : প্রধান উপদেষ্টা

কলিকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৩ এপ্রিল ২০২৫ | ৪:২৫ পিএম

বিদেশি সহায়তা হ্রাসে রোহিঙ্গা সংকট আরও জটিল : প্রধান উপদেষ্টা

ছবি : সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্র তার বিদেশি সহায়তা হ্রাস করায় রোহিঙ্গা সংকট আরও জটিল আকার ধারণ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় অর্থায়ন নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ করছে এবং টেকসই প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে সংকটের স্থায়ী সমাধানে জোর দিচ্ছে।

আজ বুধবার (২৩ এপ্রিল) দোহায় কাতার ফাউন্ডেশনের আয়োজনে ‘রোহিঙ্গা সংকট ও বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠী’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন ড. ইউনূস।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, “রোহিঙ্গা সংকট কেবল একটি মানবিক সমস্যা নয়, এটি একটি বহুমাত্রিক সংকট, যার সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও পরিবেশগত প্রভাব রয়েছে।”

তিনি জানান, বাংলাদেশ বর্তমানে প্রায় ১৩ লাখ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিককে আশ্রয় দিয়েছে। প্রতি বছর প্রায় ৩২ হাজার নবজাতক এই জনগোষ্ঠীতে যুক্ত হচ্ছে। নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ মানবিক কারণে এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে। তার মতে, এই সংকটের একমাত্র টেকসই সমাধান হলো নিরাপদ ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসন।

তিনি আরও জানান, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে নতুন করে ১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। আর ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে আরাকান আর্মির হামলার মুখে ৯০৯ জন মিয়ানমার নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। তাদের মধ্যে ৮৭৫ জনকে ইতোমধ্যে ফেরত পাঠানো হয়েছে এবং বাকি ৩৪ জনকেও শিগগিরই ফেরত পাঠানো হবে।

অর্থায়ন সংকট নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, “দুঃখজনকভাবে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় যৌথ সহায়তা পরিকল্পনার (জেআরপি) অর্থায়ন ধারাবাহিকভাবে কমে যাচ্ছে। ২০২৪ সালের জন্য ৮৫২.৪ মিলিয়ন ডলার আহ্বান করা হলেও প্রাপ্ত অর্থ মাত্র ৫৪৮.৯ মিলিয়ন ডলার, যা ৬৪.৪ শতাংশ।”

তিনি জানান, ২০২৫-২৬ সালের জেআরপি ২০২৫ সালের ২৪ মার্চ থেকে কার্যকর হয়েছে। এর আওতায় ১৪.৮ মিলিয়ন মানুষ, রোহিঙ্গা ও কক্সবাজারের স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে সহায়তা দিতে প্রয়োজন ৯৩৪.৫ মিলিয়ন ডলার।

তিনি সতর্ক করে বলেন, “সম্প্রতি বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) ঘোষণা দিয়েছিল যে ২০২৫ সালের এপ্রিল থেকে খাদ্য সহায়তা বন্ধ করা হতে পারে। তাৎক্ষণিক অর্থায়নের মাধ্যমে সাময়িকভাবে এ সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখা গেছে, তবে সেপ্টেম্বরের পর আবারও তহবিল সংকট দেখা দিতে পারে।”

পরিশেষে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশ অর্থায়ন নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। আশা করি, কাতার এ ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।”

মন্তব্য করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

Archive Calendar

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930